সিনিয়র রিপোর্টার : জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট ও বাংলাদেশে ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণাসহ একের পর এক ইস্যুতে ভয়াবহ আস্থা সংকটে পড়েন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। ফলে নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসার পরিবর্তে গত মাসে প্রায় ৩ লাখ বিনিয়োগকারী বাজার ছাড়েন।
আর তাতে বিনিয়োগকারী শূন্য হয়ে পড়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ হাউজগুলো।
সোমবার (১৯ আগস্ট) মতিঝিলের ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে গিয়ে দেখো গেছে, অধিকাংশ হাউজগুলোতে বিনিয়োগাকারী শূন্য। হাতেগোনা হাউজে ট্রেডারের সঙ্গে দু-চারজন বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কম্পিউটারে স্ক্রিনের সামনে বসে রয়েছেন।
তার মধ্যে দু-একজন শেয়ার কেনা-বেচা করছেন। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই হতাশা প্রকাশ করছেন। বাজার ভালো হবে কি না জানতে চাচ্ছেন।
ডিএসই এনেক্স ভবনের ব্র্যাক ইপিএলের বিনিয়োগকারী রিপন সাহা বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে মাঠে মারা গেছি। বাজার এতো খারাপ হবে ভাবতেও পারিনি। বাজার ভালো হওয়ার নতুন কোনো লক্ষণও দেখছি না।
রিপন বলেন, এখন শেয়ারের দাম কম বলে গত ৬ মাসে ৭ লাখ টাকা নতুন করে বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু সেই শেয়ারগুলোর দাম কমে এখন ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ঠেকেছে। ১৫ বছর বিনিয়োগের সময়ে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি।
নাম না প্রকাশের শর্তে লঙ্কা বাংলা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী বলেন, এটা কি কোনো বাজার হলো। ভালো কোম্পানি দেখে বিনিয়োগ করলেও লস হয়। আসলে বাজারটা গোটা কয়েক সিন্ডিকেটের দখলে। সরকারের উচিত বাজারটাকে বাঁচানো। কারণ পুঁজিবাজার ভালো না থাকলে দেশের অর্থনীতিও ভালো থাকবে না।
ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, বিনিয়োগকারী নেই, লেনদেনেও নেই। সুতরাং আমাদের ব্যবসাও নেই। বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউজ জনশূন্য। বাটি চালান দিয়েও বিনিয়োগাকরী খুঁজে পাওয়া যায় না। এভাবে কি ব্যবসা টিকে রাখা সম্ভব বলে উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ডিএসইর খরচ মেটাতে প্রতিদিন ৫০০ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু গত ৭ মাস ধসে ডিএসইর গড় লেনদেন হচ্ছে ৩-৪শ কোটি টাকা। ফলে মুনাফা তো দূরের কথা ডিএসইর ব্যবস্থাপনা ব্যয় মেটাতে রিজার্ভ ভেঙে খেতে হবে ডিএসইকে। আর মুনাফায় আসতে হলে প্রতিদিন এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হতে হবে।