শাহীনুর ইসলাম, সিনিয়র রিপোর্টার : প্রাথমিক গণ প্রস্তাবে (আইপিও) আবেদন করার এখন অনেক সুবিধা রয়েছে। ব্যাংকের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা ও রিফান্ড ওয়ারেন্টের গ্রহণের আর কোন ভোগান্তি নেই। সময়ের ব্যয় কমিয়ে অল্প শ্রমে এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্তে আগামী ২৫ মে থেকে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে বিনিয়োগকারীদের।
তবে ব্যাংকিং পদ্ধতি বাতিল করায় নাখোশ অনেক বিনিয়োগকারী। তাদের অভিযোগ, ‘হাউসের মাধ্যমে আবেদনে আইপিও পাওয়া যায়না’। তাই ‘বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্তে’ আবেদনের পদ্ধতি ‘ব্যাংকের মাধ্যমেও’ রাখতে বিএসইসির কাছে দাবি জানান তারা। উভয় মাধ্যমে আবেদনের প্রক্রিয়া থাকলে ‘আস্থার সংকট তৈরি হবে না’ বলে মনে করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
‘হাউজে আইপিও আবেদন নিয়ে সংশয়ে বিনিয়োগকারীরা’ শিরোনামে ১০ মার্চ স্টক বাংলাদেশ একটি সংবাদ প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ৪৬ জন পাঠক ও বিনিয়োগকারী তাদের মন্তব্য পেশ করেন। এসব মন্তব্যের বেশিরভাগই ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদনের বিপক্ষে। প্রতিবেদনটি শেয়ার করেছেন ৩০৬ জন পাঠক। মন্তব্যের কিছু তুলে ধরা হলো-
প্রতিবেদনের শেষে রুবেল তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন, rubel মার্চ ১০, ২০১৫ at ১২:২০ অপরাহ্ন kisu kisu house fajlamo suru korasa taka code joma dewar por requisition dita gala tara boltasa minimum 1000 taka rakta hoba . r o nana rokom charge apply korar danda kortasa ei bapare DSE ekta guide chai’
আইপিওর স্বচ্ছতা নিয়ে আনোয়ার হোসাইন বলেন, Anwar Hossain মার্চ ১০, ২০১৫ at ১২:৪০ অপরাহ্ন‘
আমার মনে হয় হাইজে টাকা নিয়ে জমা করছে না। যদি বৈধ আবেদনকারীর তালিকা সিডিবিএল ও কোম্পানীর ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেন তাহলে স্বচ্ছতা আসবে।’
আস্থার সংকট নিয়ে জহিরুল মন্তব্য করেন, জহিরুল মার্চ ১০, ২০১৫ at ২:০৯ অপরাহ্ন ‘ipo তে টাকা জমা হলে আমরা বুঝব কি ভাবে আমরা আইপিও আবেদন ঠিক আছে?’ আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে মাঠেও বিতর্ক উঠেছে তুঙ্গে।
‘মার্চে ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে আইপিও আবেদন’ শিরোনামে ২৩ ফেব্রয়ারি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটিতে ১৭জন মন্তব্য করেন। বেশিরভাগ মন্তব্যকারী ব্যাংকের মাধ্যমেও আবেদনের সুযোগ রাখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শুভ দৃষ্টি কামনা করেন।
প্রতিবেদনে সোহেল রানা নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘ব্যাঙ্ক এবং হাউস উভয় পদ্ধতি থাকা বাঞ্চনীয়, কারণ, কারো কারো ব্যাঙ্ক এ গিয়ে লম্বা লাইন ধরে জমা দেওয়া কষ্টকর এবং সময় সপক্ষে তাদের জন্য হাউস ভালো… সুতরাং, ব্যাঙ্ক এবং হাউস উভয় পদ্ধতি থাকা উচিত… ’
ব্রোকারেজ হাউসের জালিয়াতি সম্পর্কে ওয়াহিদ তার মন্তব্যে লিছেছেন, Wahid মার্চ ৮, ২০১৫ at ১২:০৬ অপরাহ্ন
‘IPO application Bank এর মাধ্যমে করা নিরাপদ। ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে আবেদন করে ধরা খাইছি। ব্রোকার হাউজে ভাউচারের মাধ্যমে IPO এর টাকা জমা দেই। IPO না পাওয়াতে B/O হিসাব থেকে টাকা উঠাত গেলে ব্রোকার হাউজ জানায়, আমার A/C এ কোন টাকা নাই। তখন ওদের জালিয়াতি ধরতে পারি… ’।
মো. মনির লিখেছেন, Md.Monir জানুয়ারী ২৩, ২০১৫ at ২:৫৭ পূর্বাহ্ন
‘IPO taka bank a joma deua ta e valo. Akhane kono risk ba durnitir kono way thake na. Karon house a IPO Kore pauar chance onek kom. Tai bank a IPO ar taka niley valo hoy.’তিনি আরো লিখেছেন, ‘IPO ar taka bank a niley valo hoy. Akhane akta ashtha thake . House a IPO taka joma dile IPO paua jay na. Tasara bank a taka joma dile bank ar sil daua slip paua jay ja shobar kase bish-shas joggo. Tai bank a IPO taka joma niley valo hoy. (অনেক মন্তব্য অপ্রকাশিত)
রাজধানীর মৌচাকে কথা হয় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী মহসীন উদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে। গ্লোব সিকিউরিটিজের এ বিনিয়োগকারী বলেন, ‘একমূখী না করে আবেদনের দুটি পদ্ধতি রাখলে ভালো হয়। যে যা ভালো মনে করবে, সে সেই মাধ্যমে আবেদন করবে। বিএসইসির এ বিষয়ে শিথিল আচরণ হলে ভালো হবে।’
‘নতুন পদ্ধতিতে আমান ফিডের আবেদন ২৫ মে থেকে’ শিরোনামে ১৪ মে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের নিচে অসহায়ভাবে মন্তব্য করেছেন দুজন পাঠক। রাজু ও আরিফ নামে দুজন বিনিয়োগকারী লিখেছেন- razu মে ১৫, ২০১৫ at ১:৪০ অপরাহ্ন
-
‘Apnara onek khushi hoyechen seta jani. Koren house e apply. Amra kew korbona.aref মে ১৫, ২০১৫ at ৬:৪০ অপরাহ্ন -
Asole amader moto khudro biniogkarir kotha keu vabe na. r house e dile asolei amar tk r bo share lottery te pousobe kina ke jane?
আবেদন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীর মধ্যেও অস্বচ্ছতা উল্লেখ করে ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, একজন বিনিয়োগকারী আবেদন করবেন একটি। না করে করছে ১০টি, সেক্ষেত্রে নাম অথবা ব্যাংক একাউন্ট নম্বরে ভুল থাকায় সবকটি তার করা হয়নি। সেজন্য হাউস দায়ী নয়। তবে তাদের আবেদন ঠিকভাবে করা হয়েছে কি-না, সেজন্য তারা হাউসে তালিকা দেখতে পারে। সম্ভব হলে লটারির আগের দিন বুয়েট অথবা বিএসইসির কাছে গিয়ে তারা দেখতে পারেন।
হাউসের মাধ্যমে আবেদন না করা সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা অপপ্রচার করছেন তারা অভিযোগ করতে পারেন। বিষয়টি আমরা দেখবো, আসলে কারা এটা করছে।
স্বচ্ছতার জন্য করেপোরেট গভর্নেসকে দায়ী করে এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সিইও খায়রুল বাশার মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, এখনো করপোরেট গভর্নেস আসেনি। সে জন্য ইনভেস্টর যে দাবি তুলেছে যৌক্তিক। ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে করেপোরেট গভর্নেস ঘটতি অনেক, তবে ঘাটতি মেটাতে বিএসইসি নতুন পদ্ধতি বা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে পারে।
অনিয়মের কথা উল্লেখ করে এনএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ শাহেদ ইমরান বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতেই পারে। তবে আগে প্রব্লেমটা জানতে হবে। তাদের আস্থার ঘাটতি কোথায়, কেন? তা আমাদের জানাতে হবে, তবে তো ব্যবস্থা নিতে পারবো।
আবেদনের উভয় পদ্ধতি নিয়ে এনসিসি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. বারী বলেন, আবেদনের পদ্ধতি দুটোই রাখা ভালো। তবে বিনিয়োগকারীদের নির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। আস্থার ঘাটতি কোথায়, কি কারণে তা বের করা সম্ভব হবে।