স্টাফ রিপোর্টার : চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ বেড়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, টেলিফোন, ই-মেইল ও ডাকযোগে সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ এসেছে ৩২৬টি। আগস্ট মাসে এ ধরনের অভিযোগর সংখ্যা ছিল ২৪৮টি। এক মাসের ব্যবধানে অভিযোগ বেড়েছে ৭৮টি। অর্থাৎ আগস্টের তুলায় সেপ্টেম্বরে অভিযোগ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এদিকে, সেপ্টেম্বর মাসে প্রাপ্ত এসব অভিযোগের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ২৩৫টি। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে অভিযোগ নিষ্পত্তির হার ৭২ শতাংশ। আর আগস্টে ২৪৮টি অভিযোগের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছিল ১৯৪টি। অর্থাৎ নিষ্পত্তির হার ছিল ৭৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
অবশ্য সেপ্টেম্বর মাসের অভিযোগ নিষ্পত্তির সঙ্গে পূর্বের আরো ২৭৭টি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। এর আগে জুলাই মাসে মোট অভিযোগ এসেছিল ৩৪৪টি। অভিযোগগুলোর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছিল ২২৫টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকে ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস (গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ) বিভাগ প্রতিষ্ঠার (২০১১ সালের ১ এপ্রিল) পর থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন ৭ হাজার ৮৭১টি।
এর মধ্যে টেলিফোনে অভিযোগ এসেছে ২ হাজার ৭৩৭টি এবং ই-মেইল ও ডাকযোগে অভিযোগ এসেছে ৫ হাজার ১৩৪টি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৯টি। টেলিফোনে প্রাপ্ত ২ হাজার ৭৩৭টি অভিযোগের সবগুলোই নিস্পত্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, গত মাসে অভিযোগ কিছুটা বাড়লেও আগস্টে কমেছিল। তবে অভিযোগ বাড়লেও বাংলদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে সেপ্টেম্বর মাসে পূর্বের ২৭৭টি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে ব্যাংকের অনিয়ম কমতে শুরু করেছে।’ ভবিষ্যতে ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরও কম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ব্যাংকের বিরুদ্ধে মোট ৪ হাজার ২৯৬টি অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ২ হাজার ৯৪১টি, যা ৬৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
আগের অর্থবছর অভিযোগ এসেছিল ২ হাজার ৫২৬টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৩৭০টি নিষ্পত্তি হয়েছিল। এতে করে এক বছরের ব্যবধানে অভিযোগ বাড়লেও সে হারে নিষ্পত্তি হয়নি। যদিও সংখ্যার বিচারে আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৭১টি বেশি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
অভিযোগ নিষ্পত্তি না করার তালিকার শীর্ষে রয়েছে বেসরকারি সিটি ব্যাংক। তাদের বিরুদ্ধে ৭টি অভিযোগ এলেও নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১টি। এর পরের অবস্থানে থাকা রূপালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে আসা ১৬১টি অভিযোগের মাত্র ২৯টি নিষ্পত্তি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে পিছিয়ে থাকা ১০টি ব্যাংকের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক।