স্টাফ রিপোর্টার : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে দির্ঘদিন ধরে চলেছে গবেষণা। সে গবেষণার পর অবশেষে বিনিয়োগ উপদেষ্টা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এজন্য বাজার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি একটি চূড়ান্ত নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছে।
বুধবার কমিশন সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (রিসার্চ অ্যানালাইসিস) বিধিমালা, ২০১৩ নামের এই বিধিমালা অনুমোদন করা হয়। বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে শিগগিরই এই বিধিমালা প্রকাশ করা হবে।
দীর্ঘদিন পর পুঁজিবাজার নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য নীতিমালা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে সংস্থাটি।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ক্রয়, বিক্রয় ও ধারণসংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ পাবে পাঁচ ধরনের প্রতিষ্ঠান। বিধি অনুযায়ী, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউস, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কম্পানি, বিনিয়োগ পরামর্শ এবং স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত পেশাদার গবেষক ও বিশ্লেকরা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কম্পানির শেয়ার নিয়ে গবেষণা ও মূল্যায়ন করে শেয়ার ক্রয়, বিক্রয় বা ধারণসহ বিনিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারবে। তবে এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিএসইসি থেকে পৃথক নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করতে হবে।
বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে নিবন্ধন সনদ পেতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন ২৫ লাখ টাকা থাকতে হবে। এ ছাড়া কম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য জালিয়াতি, প্রতারণামূলক বা অসাধু কার্যকলাপজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হলে কিংবা আদালত থেকে দেউলিয়া বা বিকারগ্রস্ত হলে এবং ঋণখেলাপি হলে ওই প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের যোগ্য হবে না।
বিধিমালায় বলা হয়েছে, যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে একজন গবেষণা প্রধানসহ কমপক্ষে তিন সদস্যের পৃথক গবেষণা বিভাগ চালু করতে হবে। স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বা গবেষণা প্রধানের তত্ত্বাবধায়নে কমপক্ষে তিনজন গবেষককে নিয়োজিত করতে হবে।
বিধিমালায় বিনিয়োগসংক্রান্ত গবেষকদের যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, যেকোনো ব্যক্তিকে বিনিয়োগ বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতে হলে সিএ, সিএফএ, সিপিএ, সিএমএ, এমবিএ কিংবা অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান বা অর্থায়ন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হতে হবে। পাশাপাশি পুঁজিবাজার সম্পর্কিত বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে কোনো ব্যক্তির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ না হলেও পুঁজিবাজার সম্পর্কিত বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তিনিও বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চালুর ব্যবস্থা থাকলেও এত দিন বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। শেয়ারবাজারে বিশ্লেষণধর্মী বিনিয়োগপ্রবণতা বাড়াতে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন মহল থেকে পেশাদার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চালুর প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।