সিনিয়র রিপোর্টার : সিমেন্ট উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরিগুলোকে সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। কিন্তু ওভেন পলি প্রোপাইলিন (ডব্লিউপিপি) ব্যাগের উৎপাদন সংক্রান্ত কোনো ছাড়পত্র দেয়া হয়নি।
তবুও সিমেন্ট কোম্পানিগুলো পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে নিজস্ব প্ল্যান্ট তৈরি করে ফ্যাক্টরিতে ওভেন পলি প্রোপাইলিন (ডব্লিউপিপি) ব্যাগ উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। এতে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ৩৪টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি রয়েছে। প্রতিটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে তাদের ব্যাগ উৎপাদনের প্ল্যান্ট রয়েছে। নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী নিজেরাই সিমেন্টের ব্যাগ উৎপাদন করে থাকে। এসব ফ্যাক্টরির বার্ষিক উৎপাদন প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টন। দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য আগামী তিন বছরের মধ্যে এটি প্রায় ৫ কোটি টন ছাড়াবে।
দেশের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টন সিমেন্ট উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমানে উৎপাদিত সিমেন্ট মোড়কীকরণের জন্য প্রায় ৭০ কোটি ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে, যার সম্পূর্ণটি ওভেন পলি প্রোপাইলিন (ডব্লিউপিপি) ব্যাগ। এতে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, সিমেন্ট কোম্পানিগুলোকে পরিবেশ ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। তাদের উৎপাদিত ডব্লিউপিপি উৎপাদনের জন্য কোনো ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। তবে সম্প্রতি পাট মন্ত্রণালয় এসব ক্ষতিকর ডব্লিউপিপির পরিবর্তে পাটের মোড়কে আনার পরিকল্পনা করছে। যদিও বিষয়টি টেকনিক্যাল, তবে এ বিষয়ে পাট মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
জানা গেছে, বিএসটিআইয়ের নমুনা অনুযায়ী পাটের ব্যাগ তৈরি করে সিমেন্ট মোড়কীকরণের উপযোগী করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা ২০১৩-এর তফসিলে সিমেন্টকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিএসটিআইয়ের নমুনা অনুযায়ী বিজেএমসি ও বিজেএমএর সদস্য মিলের মাধ্যমে উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচার্স এসোসিয়েশনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী সাব-কমিটি গঠনেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর আগে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা-২০১৩ সিমেন্ট অন্তর্ভুক্তির জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে টেকনিক্যাল কমিটি ইতোমধ্যে দুটি সভা করেছে। এতে সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচার্স এসোসিয়েশনের সহসভাপতি আলমগীর কবিরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
বর্তমানের মোট ১৭টি পণ্য এ আইনের আওতায় রয়েছে। পাটের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ-খুদ-কুঁড়া।