স্টাফ রিপোর্টার : একমি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান সিনহা ইনটিগ্রেটেডের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা হয়েছে। ঋণ খেলাপি হওয়ায় একমি ল্যাবরেটরিজের চেয়ারম্যান নাসির-উর-রহমান সিনহার বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
রাজধানীর শ্যামলী শাখার এভিপি ও ব্যবস্থাপক মোল্লা খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিটি গত ২৫ আগস্ট অর্থমন্ত্রণালয়ে (ডায়েরি নং ৬২৩) পাঠানো হয়। আর চিঠিটি ইস্যু করা হয়েছিল ১৪ আগস্ট। এর মূলেই মামলা হয় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেড ঋণ খেলাপি হওয়ায় একমি ল্যাবরোটরিজকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন না দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে তারা।
এ ব্যাপারে বুধবার খলিলুর রহমান বলেন, দ্য একমি ল্যাবরেটরিজকে পুঁজিবাজারে যেন তালিকাভুক্তির অনুমোদন না দেয়া হয় সে জন্য অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা গত সপ্তাহে চিঠিটি দিয়েছি। মেসার্স সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডের অনুকূলে নাসির-উর-রহমান সিনহাকে ব্যক্তিগত ঋণ দেয়া হয় এবং গ্যারেন্টার হিসেবে একমি ল্যাবরোটরিজকে রাখা হয়। শর্তানুসারে ঋণ পরিশোধ না করায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, নাসির-উর-রহমান সিনহা দ্য একমি ল্যাবরেটরিজ, সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেস সার্ভিসেস, একমি গ্রুপ, সিনহা প্রপার্টিজ এবং সিনহা শিপইয়ার্ড- এই কোম্পানিগুলোর হয় চেয়ারম্যান নয়তো পরিচালক।
কোম্পানিটির প্রোসপেক্টাস থেকে জানা গেছে, একমি ল্যাবরেটরিজ পুঁজিবাজারে ৫ কোটি শেয়ার ছেড়ে ৩০০ কোটি টাকা সংগ্রহের আবেদন জানিয়েছে। প্রতিটি শেয়ারের ফেসভ্যালু বা অভিহিত মূল্য চাওয়া হয়েছে ১০ টাকা এবং প্রিমিয়াম চাওয়া হয়েছে ৫০ টাকা। মোট ৬০ টাকা অফার প্রাইজে প্রতিটি শেয়ারের জন্য আবেদন করবে বিনিয়োগকারীরা। এ কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল।
এখন আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, একমি ল্যাবরেটরিজের চেয়ারম্যান নাসির-উর-রহমান সিনহা শামলী শাখা থেকে ব্যক্তিগত ঋণ নিয়েছেন। আর এ ঋণের গ্যারেন্টার একমি ল্যাবরেটরিজ। খেলাপি ঋণের ব্যক্তিগত গ্যারেন্টার হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) নাসির-উর-রহমান সিনহার নাম খেলাপি গ্রাহক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এ কারণেই একমি ল্যাবরেটরিজকে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত না করার অনুরোধ করা হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেস সার্ভিসেসের বিনিয়োগ বাবদ খেলাপি দায় ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, যা বর্তমানে সাব-স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলাও হয়েছে। এর অনুলিপি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক নির্বাহী পরিচালক বাংলামেইলকে বলেন, ঋণখেলাপির জন্য সিনহা ইনটিগ্রেটেডের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আমরা হাতে পেয়েছি। তবে আইপিও স্থগিত বা অনুমোদন না দেয়ার বিষয়ে কোনো চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এখনও আসেনি।
ব্যাংক সূত্র আরো জানায়, চেয়ারম্যান নাসির-উর-রহমান সিনহার ব্যক্তিগত গ্যারেন্টির বিপরীতে কম্পোজিট বিনিয়োগ সীমা ২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা মঞ্জুর করা হয়। তিনি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ওই কোম্পানির ১ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ১৫০টি শেয়ারের মালিক যা কোম্পানির মোট শেয়ারের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনসার উদ্দিন সিনহা একমি ল্যাবরেটরিজের দুই লাখ শেয়ারের মালিক।