শ্যামল রায়ঃ সম্প্রতি ঘোষিত হল ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের বাজেট। বাজেট নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিলো অনেক। বাজেটকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীরা অনেক দিন ধরেই তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা করে আসছিল। ঘোষিত বাজেটে বিনিয়োগকারীদের সে প্রত্যাশার কতটুকু প্রাপ্তি ঘটেছে কিংবা আর কি কি করলে পুঁজিবাজার বান্ধব একটি বাজেট হওয়া সম্ভব ছিলো এই নিয়ে স্টক বাংলাদেশের সাথে কথা বলেছেন একজন সাধারণ বিনিয়োগকারী, মোঃ আলাউদ্দিন ফয়সাল। যিনি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করছেন প্রায় ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার কারণে অন্য আর ১০জন মানুষের মত বাজেটকে সাদা মাঠাভাবে আমি দেখি না। কারণ বাজেটের ওপর ভিত্তি করে আগামী ১ বছর পুজি বাজারের গতি ওঠা-নামা করবে। যে সেক্টরগুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে সেই সেক্টরগুলো ভালো করবে। তাছাড়া আওয়ামীলীগ সরকারের জন্য এই বাজেটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বলা যায়। এ বাজাটের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের প্রস্তুতির নমুনা বুঝা যাবে। সরকার কিংবা অর্থমন্ত্রী কেউই চাইবে না বাজেটের ক্ষতিকর প্রভাব সরকারের ওপর পড়ুক। তাই এ সরকার অত্যন্ত গুরুত্বর সাথে এ বাজেট বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন।
অনেকেই বলে আসছেন বাজেট অত্যন্ত উচ্ছাবিলাসী হয়েছে। তাদের একটি কথা মনে করিয়ে দিতে চাই- এই অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষকে অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আপনি যদি বড় স্বপ্নই দেখতে না চান ভাল কিছু পাবেন কি করে। প্রত্যেকবার বাজেট ঘোষণার পর পরই অর্থমন্ত্রীর অনেকেই সমালোচনা করে থাকেন। প্রত্যেকবার বলার চেষ্টা করেন। প্রতিবারই তার বাজেট না-কি উচ্চাবিলাসী। তাদের জন্য আমার উত্তর অর্থমন্ত্রী যা যা বলে আসছেন বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু তার সুফল পাচ্ছে। বলা যায় এই বাজেট সেই উন্নয়নেরই ধারাবাহিকতা।
এই বাজেট পূজিবাজার বান্ধব কতটুকু? এই প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর সার্বিক বিবেচনায় বাজেট ভালো তবে পুজিবাজার নিয়ে আমরা যতটা আশাবাদি ছিলাম,বাজেটে সেভাবে প্রত্যাশা পূরন করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টা বিবেচনা করবেন। আশা করছি তারা বিষয়টা বিবেচনা করবেন। কারণ পুজিবাজারকে অবহেলিত রেখে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হতে পারে না। কাজেই সরকারকে অবশ্যই পুজিবাজারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এই মূহুর্তে বাজার পরিস্থিতি কেমন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৪/৫ কর্মদিবস ধরে বাজারে আপট্রেন্ড লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আল্টিমেটলি এই মুহুর্তে এটাই হওয়ার কথা। নতুন অর্থ বছর শুরু হয়েছে ডিভিডেন্টের প্রভাব অনেকটাই কেটে গেছে। তবে রোজার কারণে বাজার একটু এদিক সেদিক হতে পারে। আর ঈদের পর মার্কেট পুরোপুরি বুলিশট্রেন্ডে চলে যাবে।
মার্কেট যে ভালো হবে তার অনেকগুলো ইতিবাচক লক্ষণ এই মুহুর্তে বুঝা যাচ্ছে। ব্যাংকে আমানতকারীর সংখ্যা কমে আসবে। বন্ডের দামও কমে যাওয়ার কথা। কাজেই মার্কেটে মানিফ্লো বাড়বে। আর সরকার নিশ্চয়ই আগামী ১ বছর মার্কেটকে কঠরভাবে মনিটরিং করবে। পুজিবাজার নিয়ে অযথা ঝামেলা তারা মাথায় নিতে চাইবে না। কিন্তু পুজি বাজার নিয়ে কেউ কোন ব্লেইম করুক সরকার তা নিশ্চয় চাইবে না।
তবে বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই সেক্টর এবং কোম্পানি বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। তানা হলে বাজার যত ভালোই হোক ঝুকি তাদের রয়েই যাবে।